সোমবার, ১৮ জুন, ২০১২

বিডি মোবাইল নিউজ।(Bd Mobile News)


*পোস্ট নম্বর>>>(৪)
*বাংলাদেশের ও পৃিথবীর সকল প্রকার খবর নিয়ে আমি>>> বিডি মোবাইল নিউজ।।
*বিভাগঃখেলাধুলা ও স্টেডিয়াম।
*জাদুমাখা রোনালদোয় উজ্জ্বল পর্তুগাল।বিস্তারিতঃ---বিডি মোবাইল নিউজ।(Bd Mobile News)
আশার তরণীতে সওয়ার ছিল নেদারল্যান্ডসহোক না প্রথম দুই ম্যাচে হেরেছে তারা, তবুও বছর দুয়েক আগে প্রায় অভিন্ন এই দলটিই তো উঠেছিল বিশ্বকাপের ফাইনালেইউরোতে তাদের পায়ে পায়ে টোটাল ফুটবলের ফুল ফোটেনি তখনো, কিন্তু ফুটতে কতক্ষণ! স্নাইডার-ফন পার্সি-রবেন-হুন্তেলারদের মতো ক্ষণজন্মা প্রতিভাবানদের এক প্রজন্ম যে নেদারল্যান্ডসেরকিন্তু এক ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর অত্যাশ্চর্য পারফরম্যান্সের সামনে পরশু খরকুটোর মতো উড়ে গেল তারাডাচ-শিল্পীদের রীতিমতো দুমড়ে-মুচড়ে ২-১ গোলে জিতে নক আউট পর্বে পর্তুগালআর নেদারল্যান্ডস? তিন ম্যাচে হেরে শূন্য হাতে ইউরো থেকে বিদায়!
অথচ পরশুর শুরুতে এমন শেষের ইঙ্গিত ছিল নাঅন্তত ২ গোলে জেতার প্রয়োজনীয়তায় ডাচদের একাদশে এলো আক্রমণাত্মক পরিবর্তনএর সুফলে ছোট ছোট পাসের ছন্দময়তায়ই শুরু হয়েছিল তাদেরগোলের জন্যও অপেক্ষা করতে হয়নি খুব একটাডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া রাফায়েল ফন দের ফার্টের শট যখন খুঁজে নিল পর্তুগিজ জালের আশ্রয়, ম্যাচঘড়ির কাঁটা তখন মোটে ১১তম মিনিটেএরপর কোথায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে ডাচরা, তা নাউল্টো কুঁকড়ে গেল আশ্চর্যরকমভাবেগোল খাবার মিনিট কয়েক পরই রোনালদোর শট কাঁপিয়ে দেয় ডাচ পোস্টসেখান থেকে গোল না হলেও পর্তুগাল পেয়ে যায় আত্মবিশ্বাসের বারুদ
এরপর? পুরো ম্যাচই পর্তুগালের ছন্দময় ফুটবলের প্রদর্শর্র্নীজোয়াও পেরেইরার থ্রু বল থেকে ইউরোয় নিজের প্রথম গোল করেন রোনালদো৭৪ মিনিটে নানির কাউন্টার অ্যাটাক থেকে নানির পাসে লক্ষ্যভেদ করে সমালোচকদের মুখ দেন বন্ধ করেএর আগে-পরে আরো কত সুযোগ যে পেয়েছিল 'সেলেকসাও'রা! রোনালদোর দুটো শট প্রতিহত হয় বারে লেগেআরো দুবার মার্টিন স্টেইকলেনবুর্জের ক্ষীপ্রতায় হতাশ হতে হয়েছে পর্তুগিজ যুবরাজআরো দুবার তাঁর গোলমুখ খুলে দেওয়ার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি সতীর্থরাজাতীয় দলের জার্সি গায়ে অন্যতম সেরা এই ম্যাচে রোনালদো কাঁদিয়ে ছেড়েছেন ডাচদেরচেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া খুব বেশি কিছু করতে পারেনি তারাফন দের ফার্টের আরেকটি শট বারে লেগেছে এবং আরেকবার গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল বাইরে পাঠিয়েছেন ফন পার্সিব্যস, এইটুকুনই!
প্রথম দুই ম্যাচের পর সমালোচনায় জর্জরিত পর্তুগাল এমনভাবে জবাব দিতে পারায় কোচ পাওলো বেন্তো স্বভাবতই উল্লসিতচেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের আগে নিজেদের সেরা ম্যাচই তারা খেলেছে বলে কোচের দাবি, 'আমাদের খেলার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য আছেনির্দিষ্ট কিছু ধারণা নিয়ে আমরা মাঠে নামিআমি খুব গর্বিত যে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দল মাঠে গিয়ে সেটির প্রতিফলন দেখাতে পেরেছেপ্রথম ১২ মিনিট বাদ দিলে এটি টুর্নামেন্টে আমাদের সেরা ম্যাচ' দলের একাত্মতাতেই এমন ফল সম্ভব হয়েছে বলে বিশ্বাস ফুলব্যাক জোয়াও পেরেইরার, 'আমাদের নিয়ে সংশয় অনেকেরকিন্তু কঠিন এক গ্রুপ থেকে উতরে গিয়ে আমরা তাদের ভুল প্রমাণিত করতে পেরেছিসংবাদমাধ্যমে যা-ই বলা হোক না, দল হিসেবে আমরা সব সময়ই একাত্ম আছিপিছিয়ে যাওয়ার পরও ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় পাওয়াটা যার প্রমাণ'
অন্যদিকে প্রতিভাবানদের ছড়াছড়ি থাকার পরও কেবল এক সুতোয় দলটি না গাঁথায় নেদারল্যান্ডসের এমন হতশ্রী দশা বলে বিশ্লেষকদের রায়দায়টা নিজের কাঁধেই নিচ্ছেন কোচ ফন মারউইক, '২০১০ বিশ্বকাপ ফাইনালে যে দলটি খেলেছে, এটি প্রায় একই দলকিন্তু নানা কারণে দলের সেসব ফুটবলার জ্বলে উঠতে পারেনি, যারা সচরাচর পার্থক্য গড়ে দেয়তিন ম্যাচ হেরে গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে পড়া তো অবশ্যই হতাশারকোচ হিসেবে এসবের দায়-দায়িত্ব আমি নিচ্ছিএই ব্যর্থতার জন্য নিজেদেরই আমরা কেবল দায়ী করতে পারি' তাঁর হতাশার বড় জায়গা জুড়ে আছে প্রথম ম্যাচ, 'ডেনমার্কের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে হারের পর থেকে দল অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছেএর ছাপ ছিল শেষ ম্যাচেওআসলে ডেনিশদের বিপক্ষে জিততে পারলে আমাদের পুরো টুর্নামেন্টের গল্পটি হয়তো অন্য রকম হতে পারত'
হয়নি তাতাই তো ইতিহাসের এক দুর্ভাগ্যের পাকচক্রে পড়ে গেল নেদারল্যান্ডসবিশ্বকাপের রানার্সআপরা ঠিক পরবর্তী ইউরোর গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে পড়ার উদাহরণ তো ভূরি ভূরি১৯৮০ সালে নেদারল্যান্ডস, ১৯৮৪-তে পশ্চিম জার্মানি, ১৯৯৬ সালে ইতালি, ২০০৪ সালে জার্মানি এবং ২০০৮-এ ফ্রান্সকে মাথা পাততে হয়েছিল দুর্ভাগ্যের সেই গিলোটিনেএবারের নেদারল্যান্ডস দল সেই তালিকায় যোগ হলো কেবল
আর পর্তুগালের হয়তো ফুটতে শুরু করল সৌভাগ্যের ফুলইউসেবিও যা পারেননি, পারেননি লুই ফিগো-রুই কস্তারা- ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর এই দল হয়তো মিটিয়ে দেবে পূর্বসূরিদের দেনাঅপেক্ষা কেবল সময়ের! 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন